Published in the Sunday Anandabazar Patrika(ABP) on 28 April, 2024
কয়েক মাস আগে আমি জানতে পারি যে রক্তে অক্সিজেন পরিমাপ নিয়ে পেটেন্ট সংক্রান্ত বিরোধের কারণে অ্যাপল তাদের সর্বশেষ অ্যাপল ঘড়িগুলি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কে ভাবতে পেরেছিল যে একটি সাধারণ ঘড়ি শুধুমাত্র সময় বলার যন্ত্র থেকে আমাদের কব্জিকে সাজানোর জন্য একটি অত্যাধুনিক মেশিনে রূপান্তরিত হতে পারে। যদিও ঘড়ির সময়ের আগে কাজ করার ক্ষমতাকে আধুনিক প্রযুক্তির দান বলে মনে করা হয়, হরোলজি বা সময় পরিমাপের অধ্যয়ন শুরু হয় ১৪৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে, অর্থাৎ যখন মিশরীয়রা পৃথিবীর প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দ লক্ষ্য করা শুরু করেছিল। আমি যখন ওল্ড টাউন স্কোয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ১৪১০ সালে নির্মিত স্থাপত্য এবং জ্যোতির্বিদ্যার মাস্টারপিস দেখে অভিভূত, তখন যেন প্রশংসা আর বিস্ময়ে আমি ভেসে যাচ্ছিলাম। সর্বোপরি, এই প্রথম আমি ঘড়িতে একটি কঙ্কাল দেখেছিলাম যা পথচারীদের মনে করিয়ে দিচ্ছিল পৃথিবীতে তাদের সীমিত সময়ের কথা!
আমি প্রাগের ওল্ড টাউন হলে স্থাপিত প্রাগের অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্লকের দিকে তাকিয়ে ছিলাম যা ‘ওরলোজ’ নামেও পরিচিত। এই আশ্চর্যজনক ঘড়িটি এখনও বিশ্বের প্রাচীনতম সক্রিয় জ্যোতির্বিদ্যা ঘড়ি, এটি বোহেমিয়ান স্বর্ণযুগের শেষ দশকে চতুর্থ চার্লসের শাসনকালে স্থাপিত হয়েছিল। ঘড়িটি কিন্তু শুধুমাত্র সেলেস্টিয়াল মুভমেন্ট রেকর্ড করার জন্য এবং কালের রক্ষক হিসাবে সময় প্রদর্শন করছে না, বরং সমাজের প্রতিচ্ছবি এবং সেই সময়ের বিশ্বাস এবং আদর্শের একটি বিনোদনমূলক চিত্রও সমস্ত দর্শকদের সামনে তুলে ধরছে। ঘড়িটি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করার সময় আমি দেখি যে, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে আর পৃথিবী গর্বের সাথে একদম মাঝখানে বসে আছে, যা বৈজ্ঞানিক উপলব্ধি, পুরনো এবং রহস্যে মোড়া সেই সময়ের প্রচলিত ভূকেন্দ্রিক বিশ্বাসকেই প্রতিফলিত করছে।
এই ঘড়িটি কেবলমাত্র সময়ই বলে চলে না, এটি সূর্যোদয়ের সময়, চাঁদের বিভিন্ন পর্যায়, এমনকি জীবন দর্শনের পাঠও দেয়! ঠিক আমার মতোই আরও অনেক পর্যটক প্রাগের ওল্ড স্কোয়ারে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আর আমরা আমাদের সেই ধৈর্য্যের পুরস্কারও পেয়েছিলাম। ঘড়ির কাঁটার ঘণ্টা বেজে ওঠার সাথে সাথে আমরা এক আশ্চর্যজনক দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছিলাম! দেখলাম যে, ঘড়ির কাঁটার পাশে থাকা চারটি মানবমূর্তি গতিশীল হয়ে উঠল যারা জীবনের চারটি বিষয়ের প্রতিনিধিত্ব করছিল, ঘড়ি তৈরির সময় যে চারটি বিষয় সমাজ দ্বারা তিরস্কৃত হয়েছিল; প্রথমটি ছিল অহংকার, আয়নায় নিজেকে প্রশংসিত করা একটি মূর্তি এর প্রতিনিধিত্ব করছিল, পরেরটি, একজন কৃপণ যে একটি সোনা ভর্তি ব্যাগ ধরে রেখে লোভের প্রতিনিধিত্ব করছিল। ঘড়ি জুড়ে দাঁড়িয়ে ছিল মৃত্যুর প্রতিনিধি একটি কঙ্কাল যে ঘণ্টায় ঘণ্টায় সময়ের উপর আঘাত করে চলছিল। সবশেষে, লালসা এবং পার্থিব আনন্দের প্রতিনিধিত্বকারী একটি তুর্কির মূর্তি ছিল। প্রতি ঘণ্টায় কঙ্কাল ঘণ্টা বাজায় এবং সাথে সাথে অন্যান্য সমস্ত মূর্তিগুলি তাদের মাথা এদিক-ওদিক নাড়ায়, যা তাদের পৃথিবী ছেড়ে ‘চলে যাবার’ জন্য প্রস্তুত না থাকারই ইঙ্গিত দেয়। মূর্তিগুলি মৃত্যুকে মেনে নিতে চায় না, তাই মৃত্যুর বিরুদ্ধে মাথা নাড়ায়, জীবনকে আঁকড়ে থাকার সর্বজনীন মানবিক অনুভূতিরই প্রতিধ্বনি করে।
দিনের প্রতিটি ঘণ্টার মতো ঘড়িটির আরও অনেক আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্য ছিল, অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্লকের উপরে বাম এবং ডানদিকের জানালাগুলি সরে গেলে দেখা যাচ্ছিল বারোটি প্রেরিত দূতের মূর্তি প্যারেড করছে আর একটি সোনালী মোরগ ডেকে চলেছে। জনশ্রুতি যে, যদি আপনি মোরগের ডাক শুনতে পান তার মানে আপনি বেঁচে আছেন, যা চিত্তাকর্ষক ইতিহাসে এক কাল্পনিক ছোঁয়া যোগ করে।
আমি যখন ওল্ড স্কোয়ারের সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য ক্যাফেগুলির একটিতে বসেছিলাম, তখন আমার মন আনন্দে ভরে উঠছিল এটা ভেবে যে, হ্যাঁ আমি প্রতি ঘণ্টায় মোরগের ডাক শুনতে পাচ্ছি আর রীতিমতো সুস্থ আর জীবিত থাকার জন্য নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি! আমি প্রাগের এই ওল্ড টাউন স্কোয়ারের চারপাশে তাকাচ্ছিলাম আর উপলব্ধি করছিলাম যে প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে একটি করে গল্প লেখা আছে। স্কোয়ারটি কিন্তু নিছক কিছু সংখ্যক বাড়ি নিয়ে নয়; এটি আসলে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনের একটি গতিশীল কেন্দ্র। একটি ঐতিহাসিক ঘোড়ার গাড়ি কিছু পর্যটকদের নিয়ে শহর জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল যা ওই সুন্দর পরিবেশে পুরনো পৃথিবীর আকর্ষণের এক স্পর্শ যোগ করছিল! কখনও কখনও আপনাকে একটা শহরের গল্প বোঝার জন্য শত শত পৃষ্ঠার ইতিহাসের বই পড়তে হয়, কিন্তু প্রাগের ওল্ড টাউন স্কোয়ার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে শহরের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং স্থাপত্যের জাঁকজমকের জীবন্ত প্রমাণ আপনার সামনে তুলে ধরবে। গথিক, বারোক, রোমানেস্ক এবং রোকোকো সহ বিভিন্ন স্থাপত্যশৈলীর বাড়ি দ্বারা বেষ্টিত স্কোয়ারটি প্রাগের বিবর্তনের বিভিন্ন অধ্যায়কে সংক্ষেপে আপনার সামনে নিয়ে আসে।
আমি গত বছর ক্রিসমাসের ঠিক আগে প্রাগে গিয়েছিলাম আর দেখেছিলাম কীভাবে পুরনো শহর থেকে ওয়েন্সেসলাস স্কোয়ার পর্যন্ত সমস্ত প্রাগ ক্রিসমাস বাজার, উৎসবের আলো এবং ওয়াইনের সুগন্ধে শীতের ওয়ান্ডারল্যান্ডে পরিণত হয়েছিল। প্রাগের পুরনো পাথরে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে হাঁটলে আপনি বুঝতে পারবেন কেন এই শহরটিকে দ্য সিটি অফ থাউজেন্ড স্পায়ারস বলা হয়। সরু সরু গলিগুলির মধ্যে দিয়ে যাবার সময় আমি প্রাগের বিখ্যাত বোহেমিয়ান ক্রিস্টাল এবং চীনামাটির বাসনের দোকানগুলির আকর্ষণ প্রতিরোধ করতে পারিনি।
প্রাগে আমার পরবর্তী গন্তব্য ছিল চার্লস ব্রিজ। আর চার্লস ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আমি প্রাগের সীমাহীন সৌন্দর্যে ডুবে গেলাম। ১৪ শতকে নির্মিত, এই আইকনিক ব্রিজটি ওল্ড টাউনকে মোহনীয় লেসার টাউনের সাথে এবং ক্যাসেল ডিস্ট্রিক্ট হোমকে আকর্ষণীয় হার্ডকানি ক্যাসেলের সাথে যুক্ত করে। পাথরের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় আমার চারদিকে ছিল মনোমুগ্ধকর ৩০টি সাধুর মূর্তি এবং বারোক-স্টাইল আর্ট যা সেতুর উপর একটি প্রাণবন্ত ঐতিহাসিক আখ্যানরূপে আঁকা ছিল যা আসলে গথিক স্থাপত্যের একটি চমৎকার উদাহরণ। প্রাগ ক্যাসেল এবং ভ্লতাভা নদীর তীরে গড়ে ওঠা শহরটির দৃশ্যগুলি ছিল সত্যিই বিস্ময়কর, সেই দৃশ্য দেখার জন্য আমি সেখানে অনন্তকাল দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম! আমি ক্যাসেল ডিস্ট্রিক্টে ঘুরে বেড়াতে এবং চেক প্রজাতন্ত্রে তৈরি কাঠের জিনিসপত্র ও পুতুল বিক্রি করা দোকানে সময় কাটাতে খুব পছন্দ করতাম। এমনকি আমি তাদের সুস্বাদু ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ নেওয়ারও সুযোগ পেয়েছি যা এখন আধুনিক ও নতুন স্টাইলে উপস্থাপিত করা হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্ট্রিট ডেসার্ট হিসেবে চিমনি কোণ এবং কোলাচে, এগুলি শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পেস্ট্রি যা অগণিত আধুনিক মিষ্টি এবং সুস্বাদু স্বাদে দেওয়া হয়।
এটি মোটেও আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে উদ্ভাবন এবং আবিষ্কার চেক জনগণের শিরার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশ্চর্যের কিছু নেই যে, শিল্পীরা এবং বুদ্ধিজীবীরা যেমন আলবার্ট আইনস্টাইন এখানে পড়িয়েছেন এবং বিখ্যাত সঙ্গীত সুরকার উলফগ্যাং অ্যামাদিউস মোজার্ট ডন জিওভানি অপেরাকে প্রাগে নিয়ে আসেন। শহরের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে আমি এসে হাজির হই আরেক মহান চেক সঙ্গীত সুরকার আন্তোনিন ডভোরাকের মূর্তির কাছে, যার নিউ ওয়ার্ল্ড সিম্ফনি স্টার ওয়ার্স এবং জসের মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের থিম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। আমি প্রাগের বোহেমিয়ান ইহুদি ঔপন্যাসিক ফ্রাঞ্জ কাফকার পদাঙ্ক অনুসরণ করে হেঁটেছি, যাকে বিংশ শতাব্দীর সাহিত্যের অন্যতম প্রধান সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচনা করা হত।
প্রতিটি পদক্ষেপে, আমি শুধু চেকদের উদ্ভাবনগুলিতে বিস্মিত হয়েছিলাম তা 'রোবট' শব্দটি তৈরি করা থেকে শুরু করে চোখের যোগাযোগ, রক্তের চারটি গ্রুপ, স্ন্যাপ বোতাম, জাহাজের প্রপেলার, বিয়ার গ্লাস এবং সুগার কিউব আবিষ্কার পর্যন্ত। সুগার কিউব সত্যিই এমন একটি আবিষ্কার যা দৈনন্দিন জীবনকে মিষ্টি করে তোলে। জ্যাকব ক্রিস্টোফার্ড নামে একজন চেক শিল্পপতি ১৮৪১ সালে চিনির কিউব আবিষ্কার করেন কারণ তার স্ত্রী চিনি ভাঙার সময় আহত হন। প্রাগ ভ্রমণ আপনার ভ্রমণের উদগ্র বাসনাকে চরিতার্থ করবে আর আপনার মনকে ভরিয়ে তুলবে হদয় স্পর্শ করা গল্পে।
ভীণা ওয়ার্ল্ডের সাথে একটি কর্পোরেটের জন্য যখন আমরা সমস্ত ঐতিহাসিক অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থানগুলি সহ একটি অনুপ্রেরণামূলক ভ্রমণের পরিকল্পনা করছিলাম, তখন সেই সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল বিয়ার কারখানা পরিদর্শন করা! আর হবে নাই বা কেন? বিশ্বের মাথাপিছু সর্বোচ্চ বিয়ার ব্যবহারের জন্য চেক প্রজাতন্ত্র খেতাব পেয়েছে। চেক পরিবারে বিয়ার তৈরি করা একটি সম্মানিত প্রাচীন ঐতিহ্য যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। বহু চেক পরিবার বাড়িতে বিয়ার তৈরির কৌশল নিয়ে গর্ব বোধ করে, যার রেসিপি এবং কৌশলগুলি প্রায়শই দাদু-ঠাকুমার কাছ থেকে পরবর্তীকালে বাবা-মা এবং তারও পরে তাদের সন্তানদের কাছে হস্তান্তরিত হয়। পিলসনার এবং আসল বাডওয়েজারের জন্মস্থান হিসাবে চেক প্রজাতন্ত্র হল প্রকৃতপক্ষে লেগার প্রেমীদের কাছে স্বর্গরাজ্য।
প্রাগের পাশাপাশি, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ব্রনো, কার্লোভি ভ্যারির স্পা টাউন এবং সেস্কি ক্রুমলোভের ছবির মতো দক্ষিণ বোহেমিয়ান শহর আপনার তালিকায় থাকা উচিত! এছাড়াও, ভীণা ওয়ার্ল্ডের মধ্য ইউরোপ সফর আপনাকে ভিয়েনা, ব্রাতিস্লাভা এবং বুদাপেস্টের সুন্দর প্রতিবেশী শহরগুলি দেখার সুযোগ করে দেয়! তাই চলো, ব্যাগ ভরো, বেড়িয়ে পড়ো!
হায়রে ! আমি এইটা জানতাম না...
যে দেশ আধুনিক সময়ে প্রায় 20 বছর ধরে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করে, সেই দেশগুলিতে পর্যটকদের সংরক্ষিত যুদ্ধের দাগগুলির জায়গা দেখা বাধ্য। আজ সকল বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ হয়ে উঠেছে এমনই একটি যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ মানে ভিয়েতনাম (Vietnam)। সাউথ ইস্ট এশিয়া থেকে শীর্ষ 7 পর্যটক-আকর্ষণের মধ্যে একটি স্থান অর্জন করেছে এই ছোট্ট দেশের “কু চি টনেল্স”। ইন্ডো-চায়না পেনিনসুলা থেকে সবচেয়ে পূর্বের দেশ মানে ভিয়েতনাম। নৈসর্গিক সুন্দর এই দেশটিতে যুদ্ধ এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের একটি জ্বলন্ত ইতিহাস রয়েছে। ইতিহাস কালে ‘ভান লং’, ‘নাম ভিয়েত’, ‘ডিএ ভিয়েত’, ‘ডিএ নাম’ এরকম নামে পরিচিত এই দেশের নাম 1945 থেকে ‘ভিয়েতনাম’ এই নাম ঠিক করা হয়েছিল। বিশ্বের মধ্যে যে 25টি সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ আছে, তাদের মধ্যে এই দেশের স্থান আছে। চাল, কাজুবাদাম, কালো মরিচ, চা, কফি, রাবার এদের উৎপাদনে ভিয়েতনাম এগিয়ে রয়েছে। এই দেশটি হাজার হাজার বছর ধরে চীনা শাসনের অধীনে থাকায় চীনা সংস্কৃতির প্রভাব তার উপর অনুভূত হয়। ভারতের সাথে ভিয়েতনামের সম্পর্ক হল সমুদ্রপথে ভারত থেকে আসা হিন্দু ধর্ম, যে প্রাচীন কালে এখানে শিকড় গেড়েছিল। এখানের প্রাচীন ‘চাম্পা সাম্রাজ্য’ হল হিন্দুধর্মী, শৈবপন্থীয় রাজ্য। কিন্তু আপনি কি এটা জানেন? মহারাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের সম্পর্ক আরও দৃঢ়। পঞ্চাশের দশকে উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আমেরিকা নিমজ্জিত হয়েছিল। তারপর শক্তিশালী আমেরিকান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় সাউথ ভিয়েতনামের স্থানীয় লোকজন ব্যবহার করেছিলেন ‘গুরিল্লা’ মানে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের ‘গনিমি কাবা’ আর তাদের সাহায্যে তারা আমেরিকার সৈন্যকে পরিশ্রান্ত করেছিলেন। এই ‘গুরিল্লা’ যুদ্ধের জন্য মাটির নিচে টানেলের জাল তৈরি করা হয়েছিল। আজ হো চি মিন্থ সিটি (সায়গাব) থেকে কু চি জেলার মধ্যে এই ভূগর্ভস্থ পথের কিছু ভাগ পর্যটকদের জন্য খোলা আছে। সাধারণ সামগ্রী নিয়ে রাতের আঁধারে শত্রুকে কোনো সন্দেহের অবকাশ না দিয়ে তারা টানেলের এতো বড় বিস্তীর্ণ জাল সৃষ্টি করে এর মধ্যে সেনাবাহিনীর লুকানোর দালানগুলি, খাদ্য, ওষুধ, শস্ত্র মজুত, হাসপাতাল, উদ্বাস্তুদের থাকার জায়গা ইত্যাদির ব্যবস্থা ছিল। এউ টানেলে লুকানো ভিয়েতনামি লোকজন, বিল (ঢিপি) থেকে বেরিয়ে পিঁপড়ার মতো হঠাৎ বেরিয়ে আসতেন আর শত্রুর উপর আক্রমণ করে অকস্মাৎ ফিরে সুড়ঙ্গে অদৃশ্য হয়ে যেতেন। বর্তমানে পর্যটকরা এই ‘কু চি’ টানেলের কিছু বিভাগে প্রবেশ করে সেই রোমাঞ্চ অনুভব করতে পারেন। আপনি ভীণা ওয়ার্ল্ডের ‘ভিয়েতনাম টুর’ মধ্যে ভাগ নিয়ে ‘কু চি’ টানেলের মধ্যে ‘গনিমি কাবা’র অদ্ভুত অনুভূতি পেতে পারেন।
ভীণা ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল মিশন
মিশন হল বিশ্বকে দেখা বা ভারতের সব রাজ্য দেখা, সেই জন্য ইউরোপ দেখারও একটি মিশন আছে। ইউরোপ মানে ছোট ছোট দেশ নিয়ে গঠিত একটি মহাদেশ। আমরা এটিকে পশ্চিম, পূর্ব, উত্তর, মেডিটারেনিয়ান এরকম ভাগ করে দেখতে পারি। ট্রাভেল মিশনে ইউরোপের দশ-পনেরোটি দেশ এক সঙ্গে দেখা যায়। মানে দেখো, যদি ইউএসএ-তে আমরা পনেরো-বিশ দিন বেড়াতে যাই, আমরা একই দেশ দেখতে পারি। কিন্তু আমাদের ‘ইউরোপিয়ান জুয়েলস’-এ পনেরো দিনের সফরে আমরা বারোটি দেশ দেখতে পারি। ‘ইউরোপিয়ান ম্যাজিক’-এ বিশ দিনের মধ্যে তেরোটি দেশ দেখা যায়। ইউরোপে যাওয়া পর্যটকদের জন্য ছয় দিন থেকে 27 দিনের টুর রয়েছে। যারা আরও দিন, আরও দেশ, আরও দর্শনীয় ইউরোপ ভ্রমণ চান, তাদের জন্য দুটি অদ্ভুত টুর নিয়ে এসেছি আমরা। তাদের পয়লা টুর আছে 27 দিনের ইউরোপিয়ান এক্সপ্লোরার। এর মধ্যে আমরা উত্তর থেকে দক্ষিণ ইউরোপ দেখি। গ্লাসগো স্কটল্যান্ড থেকে শুরু এই সফর ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, লাক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, লিস্তানস্টাইন, ইতালি, সান মারিনো, মোনাকো, ভ্যাটিকান... এরকম একের পর এক দেশ ঘুরে শেষ হয় স্পেন দেশে। এই সফরে আমরা পনেরোটি দেশ ও একের পর এক সুন্দর 43টি শহর পরিদর্শন করি। এরকম দ্বিতীয় সফর আছে ‘স্ক্যান্ডেনেভিয়া উইথ ইস্টার্ন ইউরোপ’। 23টি দিনের এই সফরে আমরা নর্দার্ন স্ক্যান্ডেনেভিয়ান ইউরোপের সাথে ইস্টার্ন ইউরোপও ঘুরে দেখি। এই সফর শুরু হয় ডেনমার্ক আর নরওয়ে দিয়ে সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ইস্তোনিয়া দেশে visit করে আমরা ইস্টার্ন ইউরোপে প্রবেশ করি। সেখানে পোল্যান্ড, জার্মানি, চেক রিপাবলিক, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া, বসনিয়া, হার্জেগোভিনা, মন্টিনিগ্রো এই দেশগুলি দেখে ক্রোয়েশিয়াতে শেষ হয়। 23 দিনের এই সফরে আমরা 14টি দেশ ও 27টি শহর পরিদর্শন করি। এইসব বিশাল সফরের সাথে ভীণা ওয়ার্ল্ডের কাছে ‘এক দেশ টুর’ আছে, যারা এক সময়ে একটি মাত্র দেশ দেখতে চান, তাদের জন্য। একইভাবে এক সময়ে দুইটি দেশ অথবা তিনটি দেশের জনপ্রিয় কম্বিনেশনও আছে। তাই পর্যটকমণ্ডলী, আপনাদের জন্য আমরা ইউরোপকে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আপনাদের সামনে রেখেছি। এখান থেকে আপনার পছন্দ, সময়ানুযায়ী ও বাজেটের সাথে মানানসই একটি ইউরোপ টুর বেছে নিন আর আরম্ভ করুন ইউরোপ মিশন পরিপূর্ণ হওয়ার।
কী খাবেন, কীভাবে খাবেন?
আমাদের খাবার ও তার উপাদান নির্ভর করে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থা, জলবায়ুর উপর। সেইজন্য দুইটি খুবই দূরবর্তী দেশের খাবারের মধ্যে যে সাদৃশ্য দেখা যায় সেটা লক্ষ্যণীয়। আপনি সাউথ ওয়েস্ট ইউরোপের স্পেনে যখন যান, সে সময়ে এটি অনুভব করবেন। দক্ষিণ ইউরোপের মধ্যে আয়তনে বৃহত্তম দেশ হিসেবে স্পেন পরিচিত। বিশ্বের প্রাচীনতম রেস্তোরাঁ যা এই দেশেই বর্তমানে আছে। মাদ্রিদ শহরে “কাসা বোতিন” নামে রেস্তোরাঁ 1725 সালের এবং আজও সে পানভোজন-বিলাসীদেরকে তৃপ্তি ও আনন্দ দেয়। স্প্যানিশ লোকজন মাছের ভক্ত, তার সাথে তাদের ভোজনে ভাতও আছে। স্পেনের একটি খাবারের ডিশ আমাদের ভারতীয় পোলাও-এর কথা মনে করিয়ে দেয়, সেই ডিশ হল ‘পায়া’। স্পেনের পূর্ব উপকূলের বালেন্সিয়া অঞ্চল থেকে এই খাবারটি এখানে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসল রেসিপি অনুযায়ী এই খাবারে তাবেয়া (কড়াইশুঁটির স্প্যানিশ প্রকার), খরগোশের মাংস, চিকেন (অথবা মাছ), ডাবল বিন্স (মটরশুঁটি) এইসবই সিদ্ধ ভাতের মধ্যে মিশিয়ে ‘পায়া’ তৈরি হয়। গুরুত্বপূর্ণভাবে, এতে স্প্যানিশ জাফরানের ব্যবহার ভাতে একটি হলুদ সোনালী রং দেয়। এটা ‘পায়া’ নাম পেয়েছে, কারণ এটি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় অগভীর ফ্রায়িং প্যান। বালেন্সিয়া প্রান্তে সকল ফ্রাইং প্যানকে ‘পায়া’ বলে, সেই কারণে ‘পায়া’-র মধ্যে তৈরি খাবার সেই নামে পরিচিত হয়েছে। রীতিগত পদ্ধতিতে ‘পায়া’ চুলায় রান্না করা হয়। চুলাতে ইন্ধন হিসাবে কমলালেবু ও পাইনের ডাল, কোণ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। যে কাঠ ব্যবহার করা হয় তার ধোঁয়ার ‘স্মোকি’ ফ্লেবার/স্বাদ পায়ার রুচি বাড়ায়। এখন ভীণা ওয়ার্ল্ডের সাথে স্পেন সফরে ‘পায়া’ খেয়ে আপনারা এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই নিন যে, আমাদের পোলাও-র চেয়ে আলাদা কিনা। এইরকম দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খাদ্যের ঐতিহ্য ও সফরের চমৎকার অভিজ্ঞতার জন্য ভীণা ওয়ার্ল্ডের ‘ট্রাভেল এক্সপ্লোর সেলিব্রেট লাইফ’ (travel explore celebrate life) এই পডকাস্ট (podcast) শুনতে ভুলবেন না।
টুর আর হলিডে
আমাদের মস্তিষ্কে অনেক কিছুই জট পাকিয়ে আছে। পর্যটন সংক্রান্ত জট মানে কাকে কী বলতে হয় বা তাদের মধ্যে সঠিক পার্থক্য কী। পিকনিক, হঁগী, আউটিং, ট্রিপ, টুর, হলিডে, এক্সকার্সন, ভেকে, ছুটি, সাময়িক ছুটি, এক্সপিডিশন, গেট অ্যাওয়ে (gate away), জার্নি, ট্রাভেল, ভয়েজ... আমরা টাইমপাস হিসাবে এইসব শব্দের সঠিক মানে আর তাদের পার্থক্য সম্বন্ধে বসে আলোচনা করছিলাম। ভীণা ওয়ার্ল্ডের মুখ্য প্রোডাক্ট ও নেটওয়ার্কিং অফিসার সুনীলা পাটিল, গ্রুপ টুর্স, ইন্ডিভিজুয়াল হলিডেজ, মাইস কর্পোরেট টুর্স, ইনবাউন্ড মানে এনআরআই ফরেনার্স (NRI Foreigners)-দের জন্য ইন্ডিয়া টুর্স - এইসব বিষয়ে কাজ করছে। আমিও এইসব নিয়ে কাজ করতাম, এখনও করি। বাকি সব কিছু সুনীলার নিয়ন্ত্রণে। আমি আরও ভাবতে বসলাম আসলে আমাদের দুজনেরই ব্যক্তিত্ব সর্বদা আলাদা। সারা জীবন আমার পর্যটন ছিল গ্রুপ টুরের মতো। সবচেয়ে কম সময়ে যতটা সম্ভব, সবকিছু দেখতাম। সকালে আট থেকে রাতের আট, চোখ ক্লান্ত হওয়া পর্যন্ত দেখতাম আর পায়ে ব্যথা না হওয়া পর্যন্ত ঘুরে বেড়াতাম। এই আমার গ্রুপ টুরের মানসিকতা ছিল বা আছে। বারবার আসতে অসম্ভব আর এত কঠোর পরিশ্রমের মূল্য আদায় করে এসেছি, তো সব কিছু দেখা হবে, এই ভাবনা। সুনীলা বেশিরভাগ সময় যেখানেই যায় না কেন, দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় থাকে। সে আরামে এক এক করে সব দেখবে, আরামে সবার স্বাদ নেবে। এখন আমাদের সব পারিবারিক ছুটির পরিকল্পনা সুনীলাই করে। যদিও টুর্স ও হলিডে দুইটি ধরনের পর্যটন, তবে তারা যেন দুটি ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতা, একটি আমার মতো ও দ্বিতীয়টি সুনীলার মতো। তাই প্রতিটি ভ্রমণকারীর পরীক্ষা করা উচিত তারা কী ধরনের পর্যটক। যদি গ্রুপ টুরওয়ালা পর্যটক কাস্টোমাইজ হলিডেতে যান আর কাস্টোমাইজ হলিডেওয়ালাওয়ালা পর্যটক গ্রুপ টুরে যান, তবে টুর বা হলিডের মজা বাদ দিতে হয় কিন্তু এর মানে বিরক্তি ও মানসিক পীড়াকে আমন্ত্রণ জানানো। তাই সতর্ক থাকুন এবং নিজের সম্পর্কে সাবধান ও সচেতন হন। আমাদের কাছে সবসময় জিজ্ঞাসা করা প্রশ্ন মানে, “আমরা যদি শুধুমাত্র আমাদের পরিবারের সাথে একা যেতে চাই, আপনি কি সব ব্যবস্থা করতে পারবেন?” “হোয়াই নট?” কেন না? স্বাধীন পর্যটকদের জন্য এই সমস্ত কাজ শতভাগ সাফল্যে করতে আমাদের একটি ডিভিসন আছে - ‘ভীণা ওয়ার্ল্ড কাস্টমাইজ হলিডেজ ডিভিসন’। একজন ব্যক্তি হোক অথবা পারিবারিক বন্ধুদের একটি বৃহৎ গ্রুপ হোক না কেন, আপনার সব চাহিদার ব্যবস্থা এখানে পূরণ করা হয়। আপনার চাহিদার এয়ার লাইন্স, পছন্দের বিমান-ক্লাস, যেকোনো ধরনের গাড়ি পাওয়া যায়, কার, ভ্যান বা বাস, আপনার পছন্দের হোটেল, যতক্ষণ চান ততক্ষণ থাকতে পারেন, এমনকি একটি চার্টার্ড ফ্লাইট, একটি প্রাইভেট জেট সবকিছুর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়াও আপনি যেকোনো ধরনের লাক্সারি এক্সপেরিয়েন্স/বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। আপনি এটির নাম দিন এবং আমরা এটি সম্ভব করব। তাই আপনারা পৃথিবীতে কখন, কীভাবে, কোন সময়ের ভ্রমণ পছন্দ করেন, তো ভীণা ওয়ার্ল্ড কাস্টমাইজ হলিডে ডিভিসন আছে না আপনার সেবায়, এনি টাইম এনিহোয়্যার অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড, মানে - যেকোনো সময় বিশ্বের যেকোনো জায়গায়!
বুকিংগাবধান
আমাদের ভারত দেশটি এমন একটি দেশ যা বছরের 365 দিন পর্যটকদের স্বাগত জানাতে আগ্রহী। আর পর্যটকরাও সারা বছর ঘুরে বেড়ায়। এপ্রিল থেকে জুন স্কুল ছুটির মরশুম, তাই ছেলেমেয়েদের আর পরিবারের একসাথে ভ্রমণের সময়। বর্তমানে ভীণা ওয়ার্ল্ডের সকল সেলস অফিসে বুকিং শুরু হয়েছে সামার ভেকেশন টুরের। বুকিং করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। অনেক বছরের অভিজ্ঞতার পর আমার প্রথম পরামর্শ হবে, ভারতে পর্যটন করার সময় প্রবীণ নাগরিকগণ এবং যারা পারবেন তাদের ছুটির দিন ছাড়া অন্য সময়ে ভ্রমণ করা উচিত। তাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পর্যটন আরও ভালভাবে উপভোগ করা যায়। আন্তর্জাতিক (international) টুরের জন্য আমরা ছুটির দিনে যেন যেতে পারি। কারণ বিশ্বের স্কুলের ছুটির মরশুম জুলাই থেকে আগস্ট হওয়ার কারণে বিদেশি পর্যটন স্থলে ভিড় মোটামুটি পরিচালনাযোগ্য। স্কুলের কারণে শিশুদের নিয়ে পরিবারের জন্য সামার হলিডে, দীপাবলি, খ্রিসমাস এদের ছুটি ছাড়া পর্যটনের কোনো বিকল্প নেই। অবশ্যই ছুটির টুরগুলি দ্রুত পূরণ হয়, তাই কাঙ্খিত টুর আগাম বুক করতে ভুলবেন না। প্রশ্ন হল কোন ট্রিপ বুক করা। কিন্তু তার আগে আমাদের দেখতে হবে নিজের তরফে, মানে আমরা গ্রুপ টুর পছন্দ করি নাকি কাস্টমাইজ হলিডে (customized holiday)? যাদের অন্য পর্যটকদের কোম্পানি ভাল লাগে, যারা রিজার্ভেশন, কনফার্মেশন, কী, কখন, কোথায়, কীভাবে ইত্যাদি কোনো ঝামেলা চায় না, তাদের নিরাপদে গ্রুপ টুর বুক করা উচিত। “আমি আছি তো...” বলে আমাদের টুর ম্যানেজার পর্যটকদের সেবায় থাকেই। যারা নিজের মতো আরামে পর্যটন করা পছন্দ করেন, যারা সব স্থানে ঘুরে বেড়াতে চান না, তাদের জন্য প্রস্তুত আছে ভীণা ওয়ার্ল্ডের কাস্টমাইজ হলিডে (customized holiday) বিভাগ। এখানে আপনারা চাইলে যে কোনো হোটেল, গাড়ি এবং বিমান ট্রাভেলের ক্লাস নিতে পারবেন। আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজ টুরের দাম কমবেশি হয়। গ্রুপ টুর যুক্তিসঙ্গত মূল্য সহ আছে আর সেখানে নথিভুক্ত টুর প্রোগ্রামে অনেক জায়গা দেখা যাবে। গ্রুপ টুরে প্রিমিয়াম ইকোনমি অথবা বিজনেস ক্লাস এরকম বিমানে আসনের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে অতিরিক্ত টাকা প্রযোজ্য হতে পারে। তাই গ্রুপ টুর বা কাস্টমাইজ হলিডে - প্রথমে এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করুন। সেখানে ভুল নম্বর প্রয়োগ কখনও করবেন না। ভীণা ওয়ার্ল্ডের টুরগুলি আমরা এমন ভাবে পরিকল্পিত (design) করেছি যে, একের পর এক টুর করে আপনি সঠিকভাবে আপনার ভ্রমণ মিশন অর্জন করতে পারবেন। সেজন্য ভীণা ওয়ার্ল্ডের লেটেস্ট ট্রাভেল প্ল্যানার (latest travel planner) আপনি ভীণা ওয়ার্ল্ড ওয়েবসাইটে দেখে আগামী তিন বা পাঁচ বছরের জন্য প্ল্যানিং করে রাখুন। প্ল্যানিংটা অর্থ সাশ্রয় করে। তার জন্য হুট করে কিছু দেখা যায় না। সাধারণত পর্যটকরা বছরে দুইবার সফর করেন। একটি সফর ভারতে ও অন্যটি বিদেশে। আমাদের যে পর্যটকরা বছরে চারটি বা পাঁচটি টুর করেন, তাদের আমাদের কাছ থেকে একটি ভ্রমণ পোর্টফোলিও তৈরি করে নেওয়া উচিত। তারপর ট্রাভেল মিশন সানন্দে পূর্ণ করার জন্য প্রস্থান করুন। আরও অনেক বিষয়ে আমরা আমাদের পর্যটককে যথাসময়ে তথ্য দেবই।
পূর্ব ইউরোপ
ভীণা ওয়ার্ল্ডের সাথে
আপনি কি ইউরোপ দেখেছেন? সত্যিই? আবার ভাবুন…
বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ, স্পুটনিক ওয়ান, একটি ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ, একটি এমআরআই মেশিন, একটি AK-47 রাইফেল, একটি টেট্রা প্যাক... বলুন তো এসবের মধ্যে মিল কী? এসবই আবিষ্কৃত হয়েছিল পূর্ব ইউরোপে। সমগ্র এই অঞ্চলটি তার আকর্ষণীয় সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক বিস্ময় যেমন প্লিটভাইস লেকস ন্যাশনাল পার্ক নিয়ে গর্বিত, এই সম্পর্কে আমরা অনেকেই খুব কম জানি। আপনি কি জানেন যে স্লোভেনিয়া তার রহস্যে ঘেরা পোস্তজনা গুহাকে লুকিয়ে রাখে, যেখানে আছে ‘মানব মাছ’ বা ‘হিউম্যান ফিশ’? কমিউনিস্ট অতীতের স্মৃতিচারণ থেকে শুরু করে জাগরেবের মধ্যযুগীয় আকর্ষণ, প্রাগের রূপকথার ক্যাসেল, নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের ভয়াবহতা এমন আরও অনেক কিছু, ভীণা ওয়ার্ল্ড বহু বছর ধরে সফলভাবে পূর্ব ইউরোপে ট্যুর পরিচালনার মাধ্যমে দেখিয়ে আসছে। আসুন, আপনার ইউরোপের গল্পকে আরও সুন্দর করে তুলুন এবং আপনার ভ্রমণ মিশন থেকে ভীণা ওয়ার্ল্ডের সাথে একযোগে আরও অনেক দেশ ঘুরে আসুন।
চল, ব্যাগ ভরো, বেড়িয়ে পড়!
Post your Comment
Please let us know your thoughts on this story by leaving a comment.