Published in the Sunday Anandabazar Patrika(ABP) on 23 June, 2024
এটা ছিল অনেকটা মেঘের মতো; স্বপ্নিল, কোমল এবং বুদবুদের মতো। আমি যখনই এক চামচ খেলাম, আমার মুখের ভেতর যেন মিলিয়ে গেল, স্বাদের ফোয়ারা ছুটল, এই সুস্বাদু মিষ্টি স্বাদ আমার সমস্ত ইন্দ্রিয়কে আচ্ছন্ন করল এবং তৃপ্ত করল। বাতাস ঠান্ডা ছিল, কিন্তু সূর্য উজ্জ্বলভাবে আলো ছড়াচ্ছিল আমরা যখন শহরের চত্বরের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলাম আর দোকানগুলোতে কাদার তৈরি কুলহাড়ে সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো ছিল এই স্বপ্নিল সাদা ফেনা ওপরে জাফরান ছড়ানো। আমাকে দাঁড়িয়ে পড়ে এই স্বর্গীয় মিষ্টি খেতে হয়েছিল এবং আমাদের গাইড বুঝিয়ে দিয়েছিল একে বলা হয় মালাইয়ো। আমি ভেবেছিলাম ঈশ্বরের শহরে এটাই সম্ভবত খাবারের দেবতা হবে। বারাণসীর কোলাহলপূর্ণ গলি আর জাঁকজমক ভরা ঘাটের মাঝখানে রয়েছে মালাইয়ো, যা কিনা এক অসাধারণ রন্ধনশৈলীর ফসল, যা এই শহরের সমৃদ্ধিপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। দুধ চিনি এবং জাফরান দিয়ে তৈরি এই স্বর্গীয় মিষ্টি উৎকর্ষতায় পরিপূর্ণ, এমন একটি হালকা বায়বীয় ধরনের সমন্বয় যা মুখে দিলেই গলে যায়। ঐতিহ্য অনুসারে শীতের সময় প্রস্তুত মালাইয়োর রন্ধনপ্রণালীতে দরকার নিপুণতা ও ধৈর্য, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে একে বানাতে হয় এবং ক্রমাগত নাড়তে হয় এর ক্রিমের মতো সুন্দর ঘনত্ব পেতে। জাফরান মেশানোতে একটা সুন্দর গন্ধ ও সোনালি আভা আসে, যা একে আরো স্বাদু করে তোলে। মালাইয়ো শুধু একটা ডেজার্ট নয়; এতে বারাণসীর রন্ধনবিদ্যার ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার মিশে আছে, যা সবাইকে আমন্ত্রণ জানায় এ শহরের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের যে জাদু তা উপভোগ করতে।
আমার বেশ কয়েকবার বারাণসী দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আমরা সবাই জানি বারাণসী হচ্ছে পবিত্র ভূমি, মন্দিরের ভূমি, সেই চূড়ান্ত তীর্থস্থান যেখানে বলা হয় যে একবার পা রাখলেই নির্বাণ বা মোক্ষ লাভ করা সম্ভব! বারাণসী বা বেনারস (যাকে কাশীও বলা হয়ে থাকে) পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো টিকে থাকা শহরগুলির একটি। মার্ক টোয়েন, ইংলিশ লেখক ও সাহিত্যিক, যিনি বেনারসের কিংবদন্তি ও পবিত্রতা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন, একবার লিখেছিলেন, “বেনারস ইতিহাসের চাইতেও পুরনো, ঐতিহ্যের চেয়ে পুরনো এমনকি কিংবদন্তির চাইতেও পুরনো এবং এই সব কিছু মিলিয়ে দ্বিগুন পুরনো দেখায়।” এসবের পরেও এখন বারানাসিকে সম্পূর্ণ নতুনের মত দেখায় এর জন্য নতুন ভাবে তৈরি কাশী বিশ্বনাথ করিডরের ধন্যবাদ প্রাপ্য যা শহরকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের সাথে গঙ্গার ঘাট গুলোকে যুক্ত করে দিয়েছে। আমি এই করিডোর তৈরি করার আগেই কাশীতে গেছিলাম এবং এখন অপেক্ষায় আছি ফের কবে যাব এবং পুরোটা আবার অনুভব করব।
আমাকে প্রায়ই একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যে যদি আমি ধার্মিক নাও হই তাও কি আমি বারানসি যেতে পারি? আমি সেখানে কী করব? আমার কাছে বারাণসীপ্রথমত এবং বিশেষত আধ্যাত্মিক আবিষ্কারের কেন্দ্র। আমার প্রথম ভ্রমণে অবশ্যই আমি ২০০০ মন্দিরের যার জন্য কাশী বিখ্যাত, তার প্রধান প্রধান গুলো দেখেছিলাম, কিন্তু যা সব থেকে আলাদা হয়ে উঠেছিল তা হল আধ্যাত্মিকতা। আপনি যেন এটা বাতাসে অনুভব করতে পারবেন। আমি যতবার বানারসে গেছি প্রায়ই এটি উপলব্ধি করেছি। সব থেকে বড় কথা, এখানকার এতগুলো মন্দিরের মধ্যেও সবচেয়ে বিখ্যাত আরতি হচ্ছে সেটি যেখানে আমরা প্রকৃতির কাছে প্রার্থনা করে থাকি! গঙ্গা আরতি শুধু দেখার দিক থেকেই অসাধারণ দৃশ্য নয় তার সাথে খুব গভীর আধ্যাত্মিক একটি অনুষ্ঠান। এটি পবিত্র নদী গঙ্গার প্রতি গভীরতর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, বিশ্বাস করা হয় সমস্ত পাপ এতে ধুয়ে যায় এবং আধ্যাত্মিকভাবে শুদ্ধতা আসে। এটি একটি অসাধারণ দৃশ্য এবং নৌকা থেকে দশশ্বমেধ ঘাটের দিকে তাকিয়ে যেখানে এটি অনুষ্ঠিত হয় তা দেখা একটি অনন্য উপলব্ধি। যখন আমি নিজের প্রদীপ জ্বালিয়ে সবার মঙ্গলকামনায় জলে ভাসিয়ে দিয়েছিলাম, আমি লক্ষ্য করেছিলাম যে পুরোহিতরা গঙ্গা আরতির প্রদীপ নিয়ে আছেন তাঁরা কতটা মনোযোগ দিয়ে তা করছিলেন। তাঁদের উৎসর্গ, মন্ত্রোচ্চারণ এমন এক আধ্যাত্মিকতার আবেশ তৈরি করেছিল যা অতুলনীয়।
পরেরদিন সকালে আমাকে ফের ঘাটে যেতে হয়েছিল কারণ আগের সন্ধ্যায় নৌকোয় ঘুরে আমার মন ভরেনি এবং আমি আবারও নিজেকে নৌকোয় আবিষ্কার করলাম। সূর্যোদয়ের ঠিক আগের মুহূর্ত থেকে আমি গঙ্গার ওপরে সবচাইতে জাদুকরী সূর্যোদয় দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলাম যাতে সূর্যের কিরণ আকাশ আর নদীকে গোলাপি ও কমলা রঙে রাঙিয়ে দিয়েছিল আর পরিযায়ী পাখিরা নৌকোর ঠিক ওপর দিয়ে উড়ে গেল। সকালটা এমন নির্মল ও শান্তিপূর্ণ ছিল যার কোনও তুলনাই হয় না। ভীনা ওয়ার্ল্ডস ট্যুরে আপনি বারাণসীর এই সুন্দর শান্ত সকালের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন বিখ্যাত অসি ঘাটে গেলে। বারাণসীর সবকিছুকে বাদ দিয়েও এই অসি ঘাটের সঙ্গে যে পৌরাণিক গল্পখানা জড়িয়ে আছে তা খুব কৌতূহলদ্দীপক, সেটা হচ্ছে, দেবী দুর্গা শুম্ভ আর নিশুম্ভকে বধ করার পর তাঁর তলোয়ার (খড়গ)-টি একজায়গায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন, যাতে অসি নদীর সৃষ্টি হয়, যার তীরে এই ঘাটটি অবস্থিত। অসি ঘাটের আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে সুবাহ ই বেনারস যেখানে গঙ্গাকে সকালবেলার আরতি করা হয়ে থাকে।
অসি ঘাটের পাশাপাশি বারাণসীর প্রধান ঘাটগুলির মধ্যে রয়েছে দশাশ্বমেধ ঘাট- যেটি ব্রহ্মা (সৃষ্টিকর্তা) তৈরি করেছিলেন শিবের (প্রলয়ের দেবতা) জন্য এবং যজ্ঞ করে দশটি অশ্বের আহূতি দিয়েছিলেন। নিঃসন্দেহে এটি অসাধারণ একটি দৃশ্যের জন্ম দেয় এবং দুর্ধর্ষ সন্ধ্যেবেলার গঙ্গা আরতি এখানেই হয়ে থাকে। মণিকর্ণিকা ঘাট, বাজীরাও পেশোয়া ঘাটও অত্যন্ত বিখ্যাত এবং মনে রাখতে হবে আঠেরোশ শতকে অনেক ঘাটই মারাঠারা নতুন করে তৈরি করেছিলেন।
এই শহর অনেক নামে পরিচিত, বেনারস, কাশী, বারাণসী যুগ যুগ ধরে কাছের ও দূরের বহু মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। বারাণসীকে প্রায়ই কাশী বলা হয়ে থাকে হিন্দুধর্মে এর ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক গুরুত্বের কারণে। ‘কাশী’ নামটি সংস্কৃত শব্দ ‘কাশ’ থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে আলোকিত করা বা ঔজ্জ্বল্য প্রদান। এই নামটি এই শহরের আধ্যাত্মিক বিকাশ ও জ্ঞানচর্চার দিকে আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠাকে সূচিত করে। বারাণসী সব সময়ে শিক্ষার কেন্দ্র ছিল আর আমার পরবর্তী গন্তব্য ছিল বি এইচ ইউ তথা বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি, এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। মনে করা হয় আয়ুর্বেদের জন্ম বারাণসীতেই এবং মহর্ষি পতঞ্জলি, আয়ুর্বেদ ও যোগ্যাভ্যাসের জনক, বারাণসীতেই ছিলেন, এই পবিত্র শহরেই। বারাণসী তার বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্যেও বিখ্যাত, বিশেষত সর্বোৎকৃষ্ট রেশম আর সোনা-রুপোর ব্রোকেডের কাজের জন্য, শুরুর দিন থেকেই। এবং সেটাই আমার পরের দর্শনীয় স্থান ছিল যেখানে আমি তাঁতিদের সুন্দর বেনারস ব্রোকেড ও সিল্ক শাড়ি বুনতে দেখেছিলাম।
আমি কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরও ঘুরেছিলাম, সাথে কাল ভৈরব মন্দির, দেবী দুর্গার মন্দির এবং অন্যান্য অনেক মন্দির। কিন্তু যা আমি প্রথমে বুঝিনি তা হল বারাণসী খাদ্যরসিকদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর রন্ধনশৈলীর দৌলতে সকাল থেকে রাত অবধি খাদ্যসম্ভারের যাত্রা চলতে থাকে, যাতে পুরী-ভাজি, সামোসা, কচোরি, চাট থাকে সঙ্গে আরও কত কিছু।
তার পরেরদিন আমি সারনাথে যাই, যেখানে বুদ্ধ তাঁর জ্ঞানলাভের পর প্রথম উপদেশ প্রচার করেছিলেন, বারাণসী থেকে মাত্র দশ কিমি দূরত্বে, সারনাথ হিন্দু নবজাগরণের এক প্রতীক। জ্ঞান, দর্শন, সংস্কৃতি, ভক্তি, ভারতীয় শিল্পকলা ও কারুবিদ্যা এখানে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিকশিত হয়েছে। জৈনদের জন্যেও এক তীর্থস্থান এটি কারণ মনে করা হয় বারাণসীতেই তেইশতম তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ জন্মগ্রহণ করেন। বারাণসীতে বৈষ্ণব ও শৈব ধর্মমত পাশাপাশি থেকেছে। সেই সন্ধ্যায় যখন আমি দশাশ্বমেধ ঘাটে ধোঁয়াওঠা ফেনাওলা এক কাপ গরম কফি নিয়ে বসেছিলাম আমার মনে হয়েছিল সবার জন্যেই বারাণসীতে কিছু না কিছু আছে।
সম্প্রতি আমি একটি সুন্দর হিন্দি গান শুনেছি যেখানে রচয়িতা শাকিল আজমি এক যুবকের প্রেমের সঙ্গে বারাণসীর তুলনা করেছেন এবং আমার মনে হয় সেই শব্দগুলো বারাণসীর মর্মকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে! গানটি হল:
“তু বন যা গলি বেনারস কী
ম্যাঁয় শাম তলাক ভটকু তুঝমেঁ
তেরি বাতে চটপটি চাট সী হ্যায়
তেরি আঁখে গঙ্গা ঘাট সী হ্যায়
ম্যাঁয় ঘাট কিনারে সো যাউ
ফির সুবাহ সুবাহ জাগু তুঝমেঁ”
এই গানটি নিজেই পর্যটকদের বারাণসীর গাইড!
হায়রে ! আমি এইটা জানতাম না।...
যখন আমরা ইউরোপের কথা বলি, তখন শুধুমাত্র ফ্রান্স, জার্মানি, সুইৎজারল্যান্ড, ইতালি, স্পেন এবং পর্তুগালের মতো দেশগুলোর নাম মনে আসে। তবে ইউরোপীয় মহাদেশের অল্প পরিচিত জায়গাগুলি, খুব বেশি না হলেও সমানভাবে আকর্ষণীয়। এখন আমরা যদি ইউরোপের দক্ষিণ কোণে তাকাই তাহলে দেখা যায় ক্রোয়েশিয়া অবস্থান করছে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের সীমানায়। আমাদের হিমাচল প্রদেশের চেয়ে মাত্র এক হাজার বর্গকিলোমিটার বড়ো, এটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত। এই স্থানটি নেকটি এবং পেনের জন্মস্থান হিসাবে বিবেচিত হয়। সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু করে বরফ-ঢাকা ল্যান্ডস্কেপসহ, ক্রোয়েশিয়া প্রাকৃতিক বিস্ময়সম্পন্ন বিভিন্ন ভ্রমণ দর্শনীয় স্থানের সমাহার।
ক্রীড়া সংস্কৃতির চল যেন এই দেশের গভীরে নিহিত, ক্রোয়েশিয়ান ক্রীড়াবিদরা অলিম্পিক এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অসংখ্য স্বর্ণপদক পেয়েছে। প্লিটভাইস লেক জাতীয় উদ্যান হল ক্রোয়েশিয়ার মুকুটের রত্ন। এই জাতীয় উদ্যানের কারণে ক্রোয়েশিয়া পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে।
ক্রোয়েশিয়ার ৪৪৪ টি অংশে রয়ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সেগুলির মধ্যে আটটি জাতীয় উদ্যান। এই অরণ্যগুলির মধ্যে প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত হল প্লিটভাইস লেক জাতীয় উদ্যান। যেখানে ক্রোয়েশিয়া বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে, সেই সীমান্তে এই উদ্যানটি অবস্থিত। পার্কটির নাম ক্রোয়েশিয়ান শব্দ ‘Plitvice’ থেকে এসেছে, যার অর্থ অগভীর অংশ। ভূমিরূপের প্রাকৃতিক অগভীর অংশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রদে পরিণত হয়েছে। পার্কটি দুটি ভাগে নিম্ন এবং উপরের বিভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ভাগে আবার একে অপরের সঙ্গে আন্তঃসংযুক্ত ১৬ টি প্রাকৃতিক হ্রদ রয়েছে। প্রতিটি হ্রদ এক একটি অনন্য নাম এবং লোককাহিনি বহন করে। যেমন একটি হ্রদের নাম ‘প্রোসকানস্কো’। এটি ক্রোয়েশিয়ান শব্দ ‘প্রোস’ থেকে জাত, যার অর্থ কাঠের লাঠি, কারণ স্থানীয়রা এর চারপাশে কাঠের লাঠির গণ্ডি তৈরি করেছেন।
এখানে জল এক হ্রদ থেকে অন্য হ্রদে জলপ্রপাতের মাধ্যমে বয়ে যায়। যার মধ্যে সবচেয়ে বড়ো হল ‘ভেলিকি স্ল্যাপ’ বা ‘গ্রেট ওয়াটারফল’, এটি একটি নিম্ন হ্রদ থেকে ৭৮ মিটার উচ্চতায় ঝরনার মতো পড়ে। এই হ্রদ থেকে ২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে আকাশি নীল থেকে সবুজ, ধূসর এবং গাঢ় নীল এই নানান রঙের মন ভরিয়ে দেওয়া বিচ্ছুরণ দেখা যায়। শেষ হ্রদ থেকে বাহিত জল কোরানা নদীতে পরিণত হয়েছে।
জনবহুল এই উদ্যানে প্রধানত বিচ, ফার এবং স্প্রুস গাছ দেখা যায়, এই সমস্ত বন্যপ্রাণী যেমন ইউরোপীয় বাদামী ভালুক, নেকড়ে, ঈগল, পেঁচা, লিংকস এবং বন্য বিড়াল এর অ্যাসিফিলাস বনের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে এই পার্কটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্লিটভাইস লেক ন্যাশনাল পার্কে সারা বছরে পৃথিবীর সমস্ত জায়গা থেকে প্রায় ১০ মিলিয়ন পর্যটক ভ্রমণ করে। আপনি কোন সময়ে এই পার্ক দেখার পরিকল্পনা করছেন? পূর্ব ইউরোপের একটি অবিস্মরণীয় সফরে ভীণা ওয়ার্ল্ডে যোগ দিন এবং প্লিটভাইস লেক জাতীয় উদ্যানের বিস্ময়গুলি ঘুরে ঘুরে দেখুন।
ভীণা ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল মিশন
আসুন আমরা ঘুরে দেখি আমাদের বিচিত্র ভারতবর্ষকে এবং বিশ্বব্যাপী বিস্ময়কর দেশগুলিকে
ছোটো ছোটো প্রজাতান্ত্রিক দেশ হংকং, ম্যাকাও এবং তাইওয়ান থেকে শুরু করে ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া বা ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের মতো আন্তর্জাতিক অঞ্চল পর্যন্ত ২২৭টি দেশ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে৷ প্রতিটি দেশের নিজস্ব ভিসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা রয়েছে: কোনো কোনো দেশ আগে থেকেই ভিসার দাবি করে, যেখানে অন্যরা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল পরিষেবা দেয় এবং কয়েকটি দেশ ভিসা ছাড়াই প্রবেশের ব্যবস্থা করে। পর্যটনের সম্ভাবনার বৈচিত্রময় সমাহারে দেখা যায় ভিসা বিবেচনা দিক থেকে, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সিঙ্গাপুর এবং স্পেনের মতো দেশগুলি তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই দেশগুলি কোনো ঝামেলা ছাড়াই তাদের নাগরিকত্বের ভিসা দেয়, ১৯৪ টি দেশে প্রবেশাধিকারের জন্য। এর ফলে তাদের পাসপোর্টগুলি বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। ইউনাইটেড কিংডম চতুর্থ স্থান, ১৯১ টি দেশে প্রবেশাধিকারসহ। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সপ্তম স্থানে, যা তার পাসপোর্টধারীদের ১৮৮টি দেশে পর্যটন করতে দেয়।
যেখানে ভিসা ছাড়া বা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল ব্যবস্থা সহ ৬২ টি দেশে ভ্রমণ করার সুবিধা রয়েছে, এই
রঙ্কিং-এর ভিত্তিতে, আমরা ৮০ নম্বরে নিজেদের স্থান করে নিয়েছি। দেশগুলির মধ্যে তাদের পাসপোর্টের শক্তি বাড়ানোর জন্য একটি উদ্দীপ্ত প্রতিযোগিতা রয়েছে এবং এটি স্পষ্ট যে আমাদের সরকার এই তালিকায় আমাদের অবস্থানকে উন্নত করার অভিপ্রায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। যাইহোক, আমরা যদি পর্যটকদের দ্বারা সর্বাধিক পরিদর্শন করা জায়গাগুলির দিকে নজর রাখি তাহলে দেখা যায়, ফ্রান্স বেশ কয়েক বছর ধরে শীর্ষস্থান বজায় রেখেছে, বছরে প্রায় ৮০ মিলিয়ন পর্যটক সেখানে ভ্রমণ করেন। স্পেনে তার সংখ্যা ৭০ মিলিয়ন, যেখানে তুরস্ক ৪৫ মিলিয়ন পর্যটককে দেশে স্বাগত জানায়, যুক্তরাজ্য ৩৭.৫ মিলিয়ন। গ্রীস এবং ইতালি প্রত্যেকে ২৭.৫ মিলিয়ন পর্যটককে স্বাগত জানায়। জাপান এবং জার্মানি উভয় দেশেই ২৫ মিলিয়ন ভ্রমণকারী প্রতি বছর বেড়াতে আসেন। যেখানে অস্ট্রিয়া ১৭.৫ মিলিয়ন পর্যটক নিয়ে শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে।
তুলনামূলকভাবে, ভারত বছরে ৭.৫ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানায়, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিস্ময়করভাবে ৬২৫ মিলিয়ন পর্যটকদের স্থান দেয়। এই দেশ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক দ্রষ্টব্যের তালিকায় শীর্ষে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক নম্বর স্থান ধরে রেখেছে, কারণ এই স্থান দীর্ঘদিন ধরেই অনেকের স্বপ্নের জায়গা। প্রিয় বন্ধুরা, আসুন আমাদের ভ্রমণ মিশনগুলি পর্যালোচনা করা যাক এবং যে সব দেশগুলি আমাদের অজানা, সেগুলিতে পা রাখার জন্য অ্যাডভঞ্চারের পরিকল্পনা করি।
#VeenaWorldTravelMission
কি খাবেন কি ভাবে খাবেন ?
ভারতীয় রন্ধনশৈলীতে, রায়তা, আচার এবং চাটনির মতো খাবারের পাশাপাশি ডাল এবং শাকসবজির উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব রয়েছে। একইভাবে, পূর্ব এশিয় ঐতিহ্যবাহী রন্ধনপ্রণালীতে, ‘কিমচি’র মতো কোরিয়ান খাবারের উদাহরণও আছে, যা বৈচিত্র্যময় উপাদানগুলি দিয়ে তৈরি।
কোরিয়ান-শৈলীর খাবারে, মূল উপাদানগুলি ভারতীয় খাবারের মতো শাকসবজি বা মাছের সঙ্গে ভাত সহ পরিবেশিত হয়। বাঞ্চন বা সাইড ডিশ এই খাবারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার মধ্যে কিমচি অন্যতম প্রধান। ঐতিহাসিক নথি থেকে জানা যায় যে কোরিয়ায় বৌদ্ধ যুগে নিরামিষ খাবারের চল ছিল, যার ফলে রন্ধনপ্রণালীতে উদ্ভিজ্জ খাবারের প্রাধান্য ছিল। যদিও খাবারদাবারের তালিকায় পরবর্তীকালে আমিষ জাতীয় খাবারকে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, তবে নিরামিষ খাবারের প্রভাব এই সাইড ডিশের খাবারগুলির মধ্যে স্থায়ী হয়েছিল। কিমচিতে সাধারণত নাপা বাঁধাকপি (চিনা বাঁধাকপি) এবং কোরিয়ান মূলা-এর প্রাথমিক উপাদান রয়েছে। গোচুগারু (কোরিয়ান মশলাদার মরিচ), বসন্ত পেঁয়াজ, রসুন এবং জোটগাল (লবণযুক্ত মাছ) এর সংযোজন কিমচিকে মসলাদার করে তোলে। শাকসবজির ফারমেন্টেশন এবং মাছগুলিকে লবণাক্ত করার ফলে কিমচি স্বাদে গন্ধে হয়ে ওঠে অনন্য।
জলবায়ুর প্রভাবে অসংখ্য আঞ্চলিক বৈচিত্র্যসহ কোরিয়ান খাবারে কিমচির সর্বব্যাপী উপস্থিতি নিয়ে কোনও কথাই হবে না। বর্তমানে কোরিয়ায় ১৮০ টিরও বেশি ধরনের কিমচির বৈচিত্র্য লক্ষণীয়। এই কারণেই এই খাবার কোরিয়ায় তুমুল জনপ্রিয় দীর্ঘদিন ধরে। দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছু কিমচির ব্যবহার বছরে প্রায় ১৮ কেজির কাছাকাছি। যা এর সাংস্কৃতিক তাৎপর্যকে বোঝায়। এর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব স্বীকার ক’রে, কিমচি, ইউনেস্কোর ‘ইনট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ’-এর তালিকায় স্থান পেয়েছে। ভীণা ওয়ার্ল্ডের কোরিয়া সফরে কিমচিসহ কোরিয়ান খাবারের সমৃদ্ধির অভিজ্ঞতা নিন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খাদ্য ঐতিহ্য এবং অসাধারণ ভ্রমণ অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে ভীণা ওয়ার্ল্ডের পডকাস্টে টিউন করুন, ‘ট্রাভেল এক্সপ্লোর সেলিব্রেট লাইফ’।
বয়স্ক ব্যক্তিদের জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসের শুভ সূচনা
ভীণা ওয়ার্ল্ড স্পেশালের মাধ্যমে
ভীণা ওয়ার্ল্ড যখন শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে, তখন আমরা প্রাথমিকভাবে মহিলা এবং বয়স্কদের বিশেষ ট্যুরের উপরেই জোর দিয়েছিলাম। এটি ছিল আমাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা। পর্যটকদের উপর আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে তারা আমাদের সমর্থন করবে এবং প্রকৃতপক্ষে তারা তা করেছেন। আজ অবধি, আমাদের সিনিয়র পর্যটকদের অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া এবং সমর্থন পেয়েছি। আজকাল, ভারতে হোক বা বিদেশে, সিনিয়র স্পেশাল ট্যুর একটি পরিচিত বিষয়, যা কোনো আশঙ্কা ছাড়াই বয়স্কদের ভ্রমণ উপভোগ করতে সাহায্য করে। আমরা মনে করি এই সিনিয়র স্পেশাল ট্যুরগুলি আমাদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ। প্রবীণ নাগরিকরা ভ্রমণ শেষে টিম ম্যানেজার এবং সমগ্র ভীণা ওয়ার্ল্ড টিমকে তাঁরা আশীর্বাদ করেন। আমরা জীবনে এর থেকে বেশি আর কীই বা চাইতে পারি? একটা ভালো কাজের শেষে মানুষের এই আশীর্বাদগুলিই আমাদের সারা জীবনের পাথেয় হয়ে থাকে।
এই বাস্তবটা সবাইকে মেনে নিতে হয় যে, পরবর্তী প্রজন্ম পূর্ববর্তী প্রজন্মকে খুব বেশি সময় দিতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরা তাদের চাকরির জন্য দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বা বিদেশে থাকে। বাবা মায়েরা সব সময়ই ছেলেমেয়েদের মঙ্গল কামনায় চিন্তিত থাকেন। কিন্তু ছেলেমেয়েরাও তাদের বাবা মাকে দেখভাল করতে না পারার অপরাধ বহন করে বেড়ায়। ঠিক এমন একটা মুহূর্তেই ভীণা ওয়ার্ল্ডের পদার্পণ এবং তারা জোর গলায় অটুট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছে, “হ্যাঁ, আমরা আপনার জন্য এখানে আছি!” বহু বছর পরিষেবার পর, প্রবীণ নাগরিকদের কাছ থেকে এই ব্যতিক্রমী এবং অনন্য ট্যুরের প্রতি অনুরাগ তৈরি হয়েছে। অলসভাবে আর সময় কাটানোর কোনো প্রশ্নই নেই, কারণ আপনি যখন ট্যুর শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন এক বা দুই মাস আনন্দের সঙ্গে পরিকল্পনা করুন এবং প্যাকিং করুন, তারপর এক বা দুই মাস ভ্রমণ শেষে ভ্রমণের মধুর স্মৃতিগুলিকে নিয়ে আনন্দে দিন কাটান। এই স্মৃতিগুলিই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সুখের অভিজ্ঞতা এনে দেবে। তার জন্যই আমাদের সবসময় রয়েছে নতুন, ছোটো বা বড়ো নানান ট্যুর প্ল্যান। তো, চলুন, এবার জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা যাক।
ছুটির দিন
যেমনটি চেয়েছিলেন আপনি
যখন আমরা কোনও বিদেশ ভ্রমণের কথা ভাবি, তখন প্রথমেই প্লেন জার্নির কথা প্রায়শই মনে আসে। তবে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’ ছবির রাজ ও সিমরানের আইকনিক ট্রেন যাত্রা কি ভোলা যায়? ভীণা ওয়ার্ল্ড কাস্টমাইজড হলিডেকে ধন্যবাদ গোটা পৃথিবীর কাছে এই ধরনের আনন্দদায়ক ট্রেন যাত্রা সম্ভব করে দেওয়ার জন্য। আপনার পছন্দ অনুযায়ী আমরা আপনার এই ধরনের ট্রেন জার্নির ব্যবস্থা করে দেব। ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় ট্রেন ভ্রমণ হল সুইৎজারল্যান্ডের ট্রেন চড়া। এর মধ্যে ‘গ্লেসিয়ার এক্সপ্রেস’ উল্লেখযোগ্য। এই ট্রেন যাত্রার একটি অনন্য অভিজ্ঞতা হল এটি আপনাকে বোর্ডে থাকা একটি মেইলবক্স থেকে আপনার প্রিয়জনকে চিঠি পাঠানোর অনুমতি দেবে। সর্বোপরি এটি ২৯১টি ব্রিজ এবং ৯১ টি টানেল পেরিয়ে যাওয়া জার্নিটা পুরোটাই একটি অ্যাডভেঞ্চার বলা যায়।
ইউনাইটেড কিংডমের হ্যারি পটার সিরিজের আইকনিক ‘হগওয়ার্টস এক্সপ্রেস’-এর নাম অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত। যদিও এটি বাস্তবে ‘জ্যাকোবাইট স্টিম ট্রেন’ নামে পরিচিত। এটি এখনও আমাদের কল্পনার বিষয়, বিশেষ করে সিনেমায় বিখ্যাত ২১-খিলানযুক্ত সেতুর দৃশ্য দেখানোর পর থেকে। জাপানের ‘শিনকানসেন’ বা বুলেট ট্রেনের গতি প্রতি ঘন্টায় ৩২০ কিমি হওয়ার জন্য তার খ্যাতি পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। টোকিও থেকে ওসাকা এই ট্রেনে যাওয়া এবং যাত্রাপথে মাউন্ট ফুজির এক ঝলক সৌন্দর্য দেখা অনেকের কাছেই স্বপ্নের বিষয়। মানুষ একটি নৈসর্গিক ট্রেন অভিজ্ঞতার জন্য, কানাডার ‘রকি মাউন্টেনিয়ার’-এর কাচের গম্বুজযুক্ত গাড়ি এবং বাইরের দৃশ্য দেখার প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে যাত্রীরা যাত্রাপথে জলপ্রপাত, হ্রদ, হিমবাহ এবং বন্যপ্রাণী দেখে বিস্মিত হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে আলাস্কার ‘ডেনালি এক্সপ্রেস’ এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ‘নাপা ভ্যালি ওয়াইন ট্রেন’, যা তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের অনন্য প্রেক্ষাপট দেখায়। সারা পৃথিবীতেই কিছু ট্রেন তাদের নিজস্ব গন্তব্য, ব্যতিক্রমী খাবারের অভিজ্ঞতা বা থাকার ব্যবস্থা করে। যেমন অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্য কিউ ট্রেন’ অত্যাশ্চর্য গ্রেট ওশান রোড এলাকা দিয়ে তিন ঘণ্টার জার্নির মধ্যে একটি অতুলনীয় খাবারের অভিজ্ঞতাও দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকায়, ‘ক্রুগার শালাতি’ ট্রেন হোটেলটির মধ্যে ৩১ টি রুম, ২৪ টি ট্রেন ক্যারেজ স্যুট এবং ৭ টি ব্রিজ হাউস স্যুট রয়েছে। সেখানে সাবি নদীর উপর সেতুতে একটি ওভারহ্যাংগিং পুল এবং ভিউ দেখার ডেক রয়েছে। আপনার ছুটিতে এই ধরনের অবিশ্বাস্য ট্রেন অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত করতে, অবিলম্বে ভীণা ওয়ার্ল্ড কাস্টমাইজড টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
Post your Comment
Please let us know your thoughts on this story by leaving a comment.